• বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫২ অপরাহ্ন |

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য কুপিবাতি, আগামী প্রজন্মের কাছে কুপিবাতি শুধুই স্মৃতি

মোসাদ্দেকুর রহমান সাজু, স্টাফ রিপোর্টার,ডোমার / ২৮ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫২ অপরাহ্ন

প্রাচীনকালে আলোর একমাত্র অবলম্বন হিসেবে কুপিবাতির বেশ কদর ছিল। সময় এবং কালের বিবর্তনের পাশাপাশি যুগের পরিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ বাংলার ঐতিহ্যবাহী কুপিবাতি। আগামী প্রজন্মের কাছে কুপিবাতি শুধুই স্মৃতি। এর পরিচয় জানতে হলে যাদুঘর যেতে হবে তাদেরকে।

এমন এক সময় ছিল যেখানে রাতের অন্ধকার দুর করার একমাত্র অবলম্বন হিসেবে কুপিবাতির প্রচলন ও ব্যবহার ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে দোকান পাট সহ সর্বত্রই ব্যবহার ছিল কুপিবাতির।
গ্রামবাংলার অধিকাংশ লোকের কাছে কুপিবাতির কদর হারিয়ে গেলেও এখনো অনেক লোক আছেন যারা আঁকড়ে ধরে আছেন কুপিবাতির ঐতিহ্য।
মাত্র ২ যুগ আগেও গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে অতি প্রয়োজনীয় কুপিবাতি আজ বিলীনের পথে। সন্ধ্যা হলেই কুপিবাতির মিটিমিটি আলোয় চেনা যেত গ্রামের সেই চিরচেনা রুপ, শুধু তাই নয় রাজা বাদশাদের বাড়িতেও ছিল বাহারি ডিজাইনের কুপিবাতি, আধুনিক যুগের ছোয়ায় এখন তা শুধুই স্মৃতি।
আজ কালের বিবর্তনে ও প্রযুক্তিগত ব্যবহারের পাশাপাশি আধুনিকতার ছোঁয়ায় বহুল জনপ্রিয় ব্যবহৃত কুপিবাতি আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।
গ্রামীণ বাংলার প্রতিটি বাড়িতেই কুপিবাতির প্রচলন ছিল বিদ্যমান, এর মধ্যে কোনটা ছিল মাটির তৈরি, কোনটা কাঁচের আবার কোনটা পিতলের পাশাপাশি সেই সময় টিনের তৈরি কুপিবাতির প্রচলনও ছিল প্রতি ঘরে ঘরে। আকারে এবং গঠন অনুযায়ী বড়, মাঝারি এবং ছোট আকারেও পাওয়া যেত এবং দামে ছিল মানুষের হাতের নাগালের মধ্যে মাটির তৈরি কুপিবাতি বিক্রি হতো ৫ টাকা থেকে ১৫ টাকা, টিন এবং পিতলের গুলো বিক্রি হতো ৫০ টাকা ৮০ টাকা। এছাড়াও বড় কুপিবাতি গুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এবং বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত হতো প্রতিনিয়ত। এই কুপিবাতি জ্বালানোর জন্য ব্যবহৃত হতো কেরোসিন তেল। আর আলোর তারতম্য ঘটানোর জন্য লাগত কাপরের ছোট- বড় টুকরা বা পাটের আঁশ, যাকে গ্রাম্য ভাষায় শৈল্তা বলা হতো। এক সময় দেখা যেত গ্রামীন বধুরা প্রতি সন্ধ্যায় এই বাতি জ্বালানোর জন্য এটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও ঠিকঠাক করে রাখত। অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন হাট বাজারের দোকানিরা কুপিবাতিকে একটি খুটির সাথে বেঁধে দোকান করত। গ্রামীন জনপদের মানুষের অন্ধকার দুর করার একমাত্র অবলম্বন ছিল এটি। কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তি ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিদ্যুতের আবিস্কার ও ইলেকট্রিক নানা রকম উপকরণ যেমন টর্চলাইট, এলইডি বাল্ব, সোলার প্যানেল এর ফলে হারিয়ে গেছে বহুল ব্যবহৃত কুপিবাতি। যা বর্তমান সমাজের মানুষের কাছে শুধুই স্মৃতি।
এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক আহবায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার এবং শালমারা বিএন স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক জিতেন্দ্র নাথ রায়ের সাথে, তারা বলেন ছোটবেলায় আমরা নিজেরাই কুপিবাতি দিয়ে পড়াশোনা করেছি। আর আজ এই কুপিবাতি শুধুই স্মৃতি। তারা আরও বলেন তোমাদের কাছে কুপিবাতির কথা শুনে আমাদের আগেরকার দিনের কথা মনে পড়ে গেল,সে সময় প্রচুর অভাব ছিল মানুষের।এটির সাথে আমাদের জীবনের অনেক স্মৃতি জড়িত। তবে অদুর ভবিষ্যতে এই কুপিবাতি দেখতে তরুণ প্রজন্মকে যাদুঘরে গিয়ে দেখতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category