রাজশাহীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে গলার টিউমার অপারেশন করাতে গিয়ে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালটির নাম আল-আমিন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। বেসরকারি এই হাসপাতালটি রাজশাহী নগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড়ে অবস্থিত।
মারা যাওয়া কিশোরীর নাম মোহনা খাতুন (১৭)। তিনি বাঘা উপজেলার বাজুবাঘা ইউনিয়নের নটিকা গ্রামের মহিরুল ইসলামের মেয়ে। এর আগে গলার টিউমার অপারেশন করার জন্য বুধবার সকালে আল-আমিন হাসপাতালে ভর্তি হয় মোহনা।
মোহনার স্বজনরা জানিয়েছেন, বুধবার সকালে আল-আমিন হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। দুপুরে তার গলার টিউমারের অপারেশন করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাতে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে তিনি মারা যান।
রামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কিশোরী মোহনাকে বুধবার রাত ১১টার দিকে নিয়ে আসা হয়। প্রথমে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে মারা যান।
এদিকে কিশোরী মারা যাওয়ার ঘটনায় হাসপাতাল বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কিশোরী মোহনার পরিবারকে ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এজন্য পরিবার অভিযোগ না করে চেপে গেছে।
হাসপাতাল থেকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি ও মারা যাওয়ার পর মরদেহ তাদের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মোহনার মামা মনিরুল ইসলাম জানান, ভাগ্নির টিউমার অপারেশন করার জন্য আল-আমিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অপারেশন করা হয়। অপারেশন শেষ হলে ডাক্তার পোস্ট অপারেটিভ রুমে রাখে। সেখানে তার হার্টবিট কমতে থাকে। একই সঙ্গে শ্বাস-প্রশ্বাসও কমতে শুরু করে। এ সময় ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।
তবে মারা যাওয়ার বিষয়ে কোনো অভিযোগ করবেন না বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, আমার ভাগ্নি স্বাভাবিকভাবে মারা গেছে বলে মনে হয়েছে। এ নিয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। তার মরদেহ গ্রামে নিয়ে আসা হয়েছে।
মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের সঙ্গে ‘দফারফা’ হয়েছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, হাসপাতালের সাথে কোনো কিছুই হয়নি। কোন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে অপারেশন করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে আল-আমিন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
হাসপাতালটিতে দেখা গেছে, শয্যা আছে এসি ও নন-এসিসহ ২০টি। সাতজন চিকিৎসক সেখানে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন। আগে এ হাসপাতালের জায়গায় একটি রেস্টুরেন্ট ছিল। সেখানে এখন এই হাসপাতাল করা হয়েছে।
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হক বলেন, এক কিশোরী মারা যাওয়ার কথা শুনেছি। ভুল চিকিৎসায় কিনা তা জানি না। থানায় কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে।
রাজশাহী সিভিল সার্জন আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ভুল চিকিৎসা হলে অবশ্যই সে হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বিষয়টি দেখব। এ নিয়ে তদন্ত করা হবে।
প্রধান কার্যালয়ঃ বাবর রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
কর্পোরেট অফিসঃ
চৌধুরী ভিলা, বাসস্ট্যান্ড, জলঢাকা, নীলফামারী।
ইমেইলঃ taxashim@gmail.com
চৌধুরী মিডিয়া গ্রুপ এর একটি প্রকাশনা
Copyright © 2024 AlifNews24.net. All rights reserved.