• বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৪ অপরাহ্ন |

সৈয়দপুরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে চিপস

জয়নাল আবেদীন হিরো, স্টাফ রির্পোটার : / ৫৭ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৪ অপরাহ্ন

জয়নাল আবেদীন হিরো, স্টাফ রির্পোটার : নীলফামারীর সৈয়দপুরে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে ভেজাল চিপস। প্রশাসনের নজরদারি না থাকা ও তদারকিরর অভাবে এসব চিপস যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

শহরের প্রায় ১০/১২ স্পটে প্রায় প্রকাশ্যেই তৈরি হচ্ছে শিশুদের লোভনীয় রঙিন চিপস।
তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তৈরিকৃত চিপসে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক রং মেশানোর খবর জেনেও কেন নিশ্চুপ তা নিয়ে অনেকের মাঝে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবাসিক এলাকার মধ্যে পরিবেশের অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠেছে এসব চিপস কারখানা। দীর্ঘদিন ধরে নোংরা পরিবেশে ও ক্ষতিকারক রং মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে চিপস।

আটা-ময়দার সঙ্গে অপরিশোধিত লবণ, কাপড়ের রং মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে রিং চিপস। আবার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খোলা মাঠে রোদে শুকিয়ে প্যাকেট জাত করে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে।

এসব চিপসের প্রধান ভোক্তা শিশুরা।
স্থানীয়রা জানান, সৈয়দপুর শহরের ২/৩টি চিপস কারখানা ছাড়া কোন কারখানায় কখন চিপস তৈরি করা হচ্ছে তা অনেকেই জানে না। কারণ মাঝ রাতেও কারখানা চলার নজির আছে। প্রশাসনের চোখের সামনেই দিনে ও রাতে চিপস বানিয়ে অন্যত্র বিক্রি করছেন কারখানার মালিকেরা।

সৈয়দপুর শহরের সুলতানুল উলুম মাদরাসা সংলগ্ন একটি চিপস কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, এ কারখানার বিএসটিআই অনুমোদন ছাড়াই কারখানার খোলা আকাশের নিচে নানা রঙের রিং চিপস রোদে শুকাতে দেওয়া হয়েছে। চারদিক থেকে ধুলাবালি এসে পড়ছে এবং কাক-পঙ্খির মলমূত্র পড়ছে।

শ্রমিকেরা পায়ে ঠেলে রিং চিপস রোদে শুকাচ্ছেন। সেখানে দুর্গন্ধযুক্ত পানি ব্যবহার হচ্ছে চিপস তৈরিতে। শুধু তাই নয়, চিপসের কাঁচামাল তৈরি করার সময় শ্রমিক পোশাক ছাড়াই খালি হাতে তা তৈরি করছেন। চিপস তৈরির মেশিনের নিচেই স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থা দেখা গেছে।

কারখানার এক কর্মচারী জানান, এভাবেই দীর্ঘ ৫-৬ বছর ধরে আমরা চিপস তৈরি করে আসছি। এতে আমাদের কেউ কোনো বাধা দেয়নি। তবে বছর খানিক আগে প্রশাসন এসে জরিমানা করেছিলেন, কিন্তু এরপরেও মালিকের টনক নড়েনি।

এছাড়া শহরের বাঁশবাড়ি টালি মসজিদ সংলগ্ন বাবু, বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন যাওয়ার পথে মনছুরের ইটভাটা সংলগ্ন ইসমাইলসহ আরও কয়েকজন ক্ষতিকারক রং মেশানো চিপস উৎপাদন করে কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।

শহরের চিপস ব্যবসায়ী হীরা ও গোপাল বলেন, ওইসব চিপস কারখানার মালিকদের ২/১ জন ছাড়া অনেকেরই প্রয়োজনীয় কোনো কাগজপত্র নেই। শুধু পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে রং মিশিয়ে চিপস উৎপাদন করছেন। বিএসটিআই পরিচয় দানকারী কিছু কর্মকর্তাদের সঙ্গে আঁতাত করে প্রকাশ্যেই চুটিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়াসিম বারি জয় জানান, এসব চিপস শিশুদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ এই চিপস খেলে ডায়রিয়া, উচ্চ-রক্তচাপ, স্ট্রোক, আলসারের মত রোগ হতে পারে। এত শিশুদের ডায়রিয়া হয়ে স্বাস্থ্য হানি হতে পারে।

এ বিষয়ে নীলফামারী জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর কর্মকর্তা (এডি) সামসুল আলম বলেন, জনবল সংকট থাকায় মাঝে মধ্যে অভিযান চালানো হয়। পর্যাপ্ত জনবল থাকলে প্রতি সপ্তাহেই অভিযান চালানো হবে।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। অচিরেই ভোক্তা অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযান চালানো হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category