• বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ অপরাহ্ন |

সৈয়দপুরে ৫ কেজি চালের দামে  মিলছে ১ কেজি কাঁচা মরিচ

জয়নাল আবেদীন হিরো,স্টাফ রিপোর্টার / ৬৭ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ অপরাহ্ন

জয়নাল আবেদীন হিরো,স্টাফ রিপোর্টার

নীলফামারীর সৈয়দপুরে পুঁই শাক, পাট শাক, কচু শাক, কলমি শাক, ধনেপাতা, চিচিঙ্গা, বরবটি, আদা, হলুদ, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ধরনের কাঁচা সবজির দাম বৃদ্ধির কারণে মানুষের যখন নাভিশ্বাস সেই মুহূর্তে আলোচনায় এসেছে কাঁচা মরিচ। বিভিন্ন বাজারে কাঁচা মরিচের দাম এক মাসের ব্যবধানে বেড়ে হয়েছে তিন,চারগুণের বেশি।

সোমবার (৮জুলাই) সকালে শহরের
কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি মরিচ ১৯০ টাকায় কিনে খুচরা বাজারে দোকানদাররা বিক্রি করছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। কেজিতে ক্ষুদ্র ভোক্তাদের কাছে ২০/৩০ টাকা বেশি নিচ্ছে। বর্তমানে মরিচের বাজার দরে অতিষ্ঠ ক্রেতারা। কেউ কেউ কাঁচা মরিচ না কিনে শুকনো মরিচের গুঁড়া বা প্যাকেট কিনছেন। আবার শুকনা মরিচ প্রকারভেদে ৩৫০-৪০০টাকা কেজি দরে কিনতে বাধ্য হচ্ছে ক্রেতারা।

ওই বাজারে দেখা হয় কৃষি শ্রমিক ও সবজি ক্রেতা মোহাম্মদ আলী (৫৫) সঙ্গে। তিনি জানান, আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের মিল নাই। সারাদিন ইনকাম হয় ৩০০ টাকা। তাও কাজ কোনোদিন হয়, কোনোদিন হয় না। তাহলে গরিব মানুষের বাঁচার উপায় কী? তিনি বলেন, আলু, বেগুন, ঢেঁড়স, মরিচ, পেঁয়াজ, আদা, হলুদ বরবটি, পটলসহ সব কিছুর দামই বেশি। একটু বৃষ্টি নামলেই ব্যবসায়ীরা অজুহাত দেয় আজ মরিচের আমদানি নাই। তাই মরিচসহ প্রত্যেকটি কাঁচামালের দাম বেড়েছে।

পৌর শহরের বাবুপাড়ার রশিদুল ইসলাম (৪৫) বলেন, বাজার মনিটরিং না থাকায় খুচরা ব্যবসায়ীরা চড়া দামে এসব পণ্য বিক্রি করছে।

এদিকে, হাটবাজার মনিটারিং কর্মকর্তা এটিএম এরশাদ আলম জানান, খুব শিগগরিই বাজার দর স্থীতিশীল রাখতে অভিযান চালানো হবে।

অন্যান্য সবজির সঙ্গে বাজারে সাজিয়ে রাখা কাঁচা মরিচ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৫৭৫ হেক্টর জমিতে মরিচ আবাদ করা হয়েছে। প্রথম দিকে আবহাওয়া একটু খারাপ হলেও পরে স্বাভাবিক হয়, ফলে মরিচের উৎপাদনও ভালো হয়েছে। তারপরেও কারণ-অকারণে কাঁচা মরিচের দাম ওঠানামা করছে।

কাঁচা মার্কেটের আড়তদার জাকির হোসেন জানান, আগে বগুড়া ও দিনাজপুর থেকে আমাদের এখানে কাঁচা মরিচ আসতো। কিন্ত চলতি বর্ষা মৌসুমে অন্যান্য জেলাসহ স্থানীয় মরিচ চাষিদের ক্ষেতে গাছ মরে যাওয়ায় বাজারে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাইকারি প্রতিকেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। তবে শুনছি, খুচরা বাজারে নাকি ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই কথা জানান, আড়তদার আনোয়ার হোসেন। তারা আরও জানান, অনেক ব্যবসায়ী আগেই কৃষকের কাছে মরিচ ক্ষেত কিনে নেন। পরে সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়ে আড়তে বিক্রি করেন।

কামারপুকুর বাজারের খুচরা বিক্রেতা
এরশাদ ও আকমল মিয়া জানান, আড়তদাররা মরিচ সাপ্লাই দিতে পারছে না। তাই বেশি দামে মরিচ কিনতে হচ্ছে। এছাড়াও মরিচ বাসি হলে পচে যায় এবং ওজনে কম হয়। ফলে বাধ্য হয়ে একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বাজার বেশি হওয়ায় ক্রেতারা কাঁচা মরিচ কিনছে না। অনেকেই প্যাকেটের গুঁড়া মরিচ কিনছে।

মেসে রান্না করার কাজে মরিচ কিনতে আসা শহরের আলেয়া বেগম বলেন, ‘মাছ, মাংস রান্নায় কাঁচা মরিচের দরকার হয়। তরকারির স্বাদও ভালো হয়। কিনতে এসে দেখি, এক কেজি চালের দামের চেয়ে এক কেজি মরিচের দাম পাঁচগুণ বেশি। তাই কাঁচা মরিচ না কিনে শুকনা মরিচের গুঁড়া কিনলাম।’

জেলা হাট বাজার মনিটরিং কর্মকর্তা এটিএম এরশাদ আলম খান জানান, আবহাওয়া অনুকূল না থাকায় মরিচের উৎপাদন কমেছে। ফলে দাম একটু বেশি। তবে কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category