নারীর প্রতি সহিংসতামূলক অপরাধের জঘন্যতম এক রূপ ধর্ষণ। প্রতিদিনের খবরের পাতা উল্টালেই চোখে পড়ে কোনো না কোন ধর্ষণের খবর। সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যান মতে, দেশে ধর্ষণের শিকার প্রতি ৫ জনের ৩ জনই শিশু। গত ৯ বছর ধরে হওয়া ১০ হাজারের বেশি মামলা বিশ্লেষণ করে ভয়াবহ এ তথ্য জানিয়েছে জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উপলক্ষে রাজধানীর মিরপুরে এক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার শতকরা ৬০ ভাগ ঘটনার শিকার হয় শিশুরা। এসব ঘটনায় শাস্তির উদাহরণও সামান্য। দেশে নারীদের নিরাপত্তা এবং অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে বিচারহীনতার এ সংস্কৃতিকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বর্তমান সরকার এই সংস্কৃতির ইতি টানতে চায়।
জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্তদের মধ্যে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ বিচারের সম্মুখীন হচ্ছেন। এ ছাড়া ৬৯ শতাংশ মামলায় বিভিন্ন মহলের চাপের অভিজ্ঞতা লাভ করেন সহিংসতার শিকার ব্যক্তি ও পরিবার।
উন্নয়নকর্মী রুমা সুলতানা বলেন, গত ৯ বছরে ঘরের অভ্যন্তরে নারীর প্রতি সহিংসতার হার ৯ শতাংশ বেড়ে ৮৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া কর্মক্ষেত্রে ২৪ দশমিক ৫০ শতাংশ নারী নিজেদের অনিরাপদ বলে দাবি করছেন।
নারী ও শিশুর প্রতি নির্যাতনকে সভ্যতার নিকৃষ্টতম অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করছেন অধিকারকর্মী শাহীন আনাম। তবে, বর্তমান সরকার নারীদের প্রতি সহিংসতা রুখতে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার পরিচালক মোহাম্মদ আল মামুন।
তিনি বলেন, যারা নানান সামাজিক কারণে আইনগত সহযোগিতা চাইতে পারছে না, তারা আমাদের কাছে সে আইনি সহায়তা পেতে পারেন। এ ছাড়া যারা পারিবারিক সহিংসতা ও শারীরিক হেনস্তার শিকার তারাও আমাদের কাছে আইনি সহায়তা পেতে পারেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলছে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ। এ উপলক্ষে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করছে সরকারি বেসরকারি সংস্থাগুলো।