. .
  • বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন |
Headline :
জলঢাকায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিএনপি’র প্রস্তুতি সভা দিনাজপুর অঞ্চলিক স্কাউটসের লিডার ট্রেনার মনোনীত হয়েছেন ডোমারের বিনয় রায় সৈয়দপুরে ৪০ লাখ টাকা মূল্যের ২০ হাজার পিস টাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার, যুবক গ্রেফতার নেতাকর্মীদের হত্যার বিচারের দাবিতে নীলফামারী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের মানববন্ধন ডোমার পৌর এলাকায় সড়ক দখলদ্বারিত্বের কারণে প্রতি নিয়ত ঘটছে প্রানহানীর মতো দূর্ঘটনা জলঢাকায় মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে র‍্যালী আলোচনা সভা ও গুনীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত  চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে ছিনতাই, যাত্রী গুরুতর আহত জলঢাকায় বেগম রোকেয়া ও দুর্নীতি বিরোধী দিবস উপলক্ষে র‍্যালী ও আলোচনা সভা নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ডোমারে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত বর্ণাঢ্য আয়োজনে ডোমারে বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপিত

৬ই ডিসেম্বর ডোমার হানাদার মুক্ত দিবস

মোসাদ্দেকুর রহমান সাজু,স্টাফ রিপোর্টার,ডোমার নীলফামারী / ৬৫ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন

মোসাদ্দেকুর রহমান সাজু,স্টাফ রিপোর্টার,ডোমার নীলফামারীঃ দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ৩০ লক্ষ শহীদ ও ৩ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের মধ্যে দিয়ে বাঙালি জাতি একটি বাংলাদেশ নামে স্বাধীন দেশ পেয়েছে।

তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ৬ই ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনী হটাতে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রণী ভূমিকায় শত্রুমুক্ত হয় নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলা। এরপর থেকে প্রতিবছরের ন্যায় এই দিনকে ডোমার হানাদার মুক্ত দিবস’ হিসেবে পালন করেন ডোমারবাসী।

৩রা ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ইকবাল রশিদের নেতৃত্বে ডোমারের বীর মুক্তিযোদ্ধা শমসের আলী, ডিমলার বীর মুক্তিযোদ্ধা রশিদুল ইসলাম সহ তাদের দলটি প্রথমে গোমনাতী হয়ে বোড়াগাড়ী মুক্তকরণে তারা এগিয়ে আসেন।

৪ঠা ডিসেম্বর ভারতীয় মিত্র বাহিনীর মেজর ছাতোয়ানের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুর রহমানসহ আরও বেশকিছু মুক্তিযোদ্ধা ডোমারকে মুক্তকরণের অপারেশনে যোগ দেন, এরপর ৫ই ডিসেম্বর ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে রংপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাপ, ভোগডাবুরীর আব্দুল জব্বার কানু, আমিনুর রহমান মাস্টার গোসাইগঞ্জ হয়ে সীমান্তবর্তী চিলাহাটি এলাকা মুক্ত করে জোড়াবাড়ী হয়ে বোড়াগাড়ী হাসপাতালের (বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের) উত্তরদিকে হলদিয়াবন ও বুদলিরপাড় এলাকায় সমবেত মুক্তি বাহিনীর সাথে যোগ দেয়।

সেদিন পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল গোলাগুলির এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিনীর উপর বোমা নিক্ষেপ করলে এতে বেশ কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয়। এরপর রাত ২টার দিকে মুক্তিবাহিনীদের পথ রোধ করতে দেওনাই সেতু (বোড়াগাড়ী ব্রিজ)ডিনামাইট দিয়ে ব্রিজটি উড়িয়ে দেয় পাকবাহিনীর সদস্যরা।

এবং সেদিন রাতেই পশ্চিম বোড়াগাড়ীর উত্তর পাড়ায় হামলা চালিয়ে ৭ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে হানাদাররা। এরপর তারা সোনারায় হয়ে নীলফামারীর দিকে পিছু হটে। তাদের অনাবরত গোলা বর্ষণে বেশকিছু মুক্তিযোদ্ধা আহত হন।
অবশেষে ৬ই ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অসীম সাহসিকতায় ডোমার উপজেলা পাক হানাদার মুক্ত হয়।

ডোমার মুক্তকরণের অগ্রসৈনিক ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শমশের আলী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুর রহমান।
মুক্তিযুদ্ধের ৬নং সেক্টর কমান্ডার খাদিমুল বাশারের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধারা লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ডোমারকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করেন।
সেদিন বাংলাদেশের পতাকা হাতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে। স্লোগানে স্লোগানে পুরো এলাকায় মানুষের ঢল নামতে থাকে ডোমারের রাজপথে।

এবিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক সহকারী কমান্ডার (সাংগঠনিক) বীর মুক্তিযোদ্ধা শমসের আলী জানান, আমরা ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ইকবাল রশিদের নির্দেশে বোড়াগাড়ী হাসপাতালের পাশে একত্রিত হই। ভোরের দিকে মেজর ছাতোয়ান ও মুক্তিবাহিনীর প্লাটুন কমান্ডার আমিনার রহমান আমাদের সাথে যোগ দেয়। এরপর ৬ই ডিসেম্বর সকালে ডোমার শহরে প্রবেশ করে হানাদার মুক্ত করি। তিনি আরও বলেন সে সময়কার ৬নং সেক্টর কমান্ডার খাদিমুল বাশারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় পতাকা উত্তোলন করেন।

পাকহানাদার বাহিনীর অত্যাচারে ডোমারের অসংখ্য মানুষ নির্যাতনের শিকার সহ তাদের বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি লুটপাট করে নিয়ে যায় সবকিছু।
ডোমার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী ডোমারের নিরীহ মানুষের উপর হামলা করে তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়।

হত্যা করে অসংখ্য মানুষকে। তাদের নির্যাতনে অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধ হলো আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ অধ্যায়। মুক্তিযুদ্ধের কথা মনে পড়লে এখনো মনে শিহরন জাগে।

তাই প্রতি বছরের ন্যায় দিবসটিতে জাতির সূর্য সন্তান সহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন ডোমারবাসী।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category