মোসাদ্দেকুর রহমান সাজু,স্টাফ রিপোর্টার,ডোমার নীলফামারীঃ মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের সপ্তাহ খানেক যেতে না যেতেই ১৯৭১ সালের ২৩শে ডিসেম্বর নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ৯নং ইউনিয়নের সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ক্ষতিগ্রস্ত শহীদ মিনার পুনঃনির্মাণের সময় যুদ্ধকালীন অব্যবহৃত রকেট লঞ্চারের বিস্ফোরণে ৮ জন নিহত হন। একারণে প্রতিবছর ২৩ ডিসেম্বরকে ‘সোনারায় শোক দিবস’ হিসেবে পালন করেন স্থানীয়রা।
স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলার আপামর জনতা। দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও তিন লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে দখলদার পাকবাহিনী থেকে পরিত্রাণ পেয়ে একটি স্বাধীন বাংলাদেশের ভূখণ্ড অর্জন করে বীর বাঙালিরা।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ডোমারেও স্বাধীনতাকামী মানুষের উপর নির্মম নির্যাতন ও সর্বস্ব লুটপাট করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তাদের বর্বরতায় প্রাণ হারান অনেকেই। অবশেষে ৬ই ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় ডোমার। উড়ে লাল-সবুজের পতাকা। অলিতে-গলিতে, পাড়া-মহল্লায় বিজয়ের স্বাদে খুশির জোয়ারে ভাসে স্বাধীনতাকামীরা।
তবে দেশ স্বাধীনের সপ্তাহ খানেক যেতে না যেতেই শোক নেমে আসে উপজেলার অন্তর্গত সোনারায়বাসীর হৃদয়ে। যুদ্ধের সময় সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবস্থিত শহীদ মিনারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে বছর ২৩শে ডিসেম্বরের সেটি পুনঃনির্মাণের সময় কয়েকজন কলেজ ও স্কুল পড়ুয়া ছাত্র পার্শ্ববর্তী পুকুরে পড়ে থাকা অব্যবহৃত রকেট লঞ্চারের স্টিল পাইপ দিয়ে শহীদ মিনারের ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড তৈরির জন্য স্ক্রু খোলা মাত্র বিস্ফোরিত হয়ে ৮ জন নিহত এবং ৮ জন গুরুতর আহত হন।
সেদিনের বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত হন- সোনারায়ের ছাত্র সফিকুর রহমান (সফিকার), চিকনমাটির ছাত্র বজলার রহমান, সোনারায়ের কলেজ ছাত্র ছানাউল আলম ছানু, খুরশিদ আনোয়ার দিলিপ, মাহবুবুল হক চৌধুরী, স্কুলছাত্র মোস্তাহারুল ইসলাম মস্তু, হরিণচড়া ইউনিয়নের আব্দুল হামিদ, নীলফামারীর বাবু। সেই সময় বাবু সোনারায়ে তার নানাবাড়ি বেড়াতে এসেছিল। বিস্ফোরণে তার মস্তক ছিন্নভিন্ন হয়ে বিদ্যালয়ের দেয়ালে লেগে ছিল। তৎকালীন এমএনএ বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রউফ বিস্ফোরণে গুরুতর আহত ৮ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করেন।
বিস্ফোরণের ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন ডোমার থানা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি সোনারায় ইউনিয়নের গোলাম আরশাদ, সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার, আফিজ উদ্দিন সরকার, হাজী আব্দুল হক, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহমুদুল হক চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক ময়নুল ইসলাম সহ জামিরবাড়ী এলাকার ২ জন রাজমিস্ত্রী।
প্রধান কার্যালয়ঃ বাবর রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
কর্পোরেট অফিসঃ
চৌধুরী ভিলা, বাসস্ট্যান্ড, জলঢাকা, নীলফামারী।
ইমেইলঃ taxashim@gmail.com
চৌধুরী মিডিয়া গ্রুপ এর একটি প্রকাশনা
Copyright © 2024 AlifNews24.net. All rights reserved.