জয়নাল আবেদীন হিরো,নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ মাঘে ঘন কুয়াশা অব্যাহত রয়েছে উত্তরের জনপদে। এ কারণে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন নীলফামারীর সৈয়দপুরের আলু ও বোরো বীজতলা চাষিরা।
ক্ষেতের আলু ও বীজতলা রক্ষায় প্রতিদিনই ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে। এতে উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
সৈয়দপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে এক হাজার ৩২৯ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, শুরুতে ১৯৮ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু উৎপাদন করা হয়।
গত বছরের ডিসেম্বরের শুরুতে আগাম আলু বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা কেজিতে। বর্তমানে আলুর দরপতন হয়ে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২০ টাকায়।
সরেজমিনে উপজেলার কামারপুকুর, বাঙ্গালীপুর ও বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করছেন। উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কৃষক আমিনুর রহমান নিজের পাঁচ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করছেন। লোক লাগিয়ে ওই জমিতে ছত্রাকনাশক ছিটাচ্ছিলেন। ক্ষেতেই কথা হলো তার সঙ্গ
আমিনুর রহমান বলেন, ‘হিয়াল (ঠান্ডা) কুয়াশায় আলুর গাছে কোকরা লাগেছে। বাধ্য হয়ে ভুইবাড়িত (খেত) স্প্রে করিবার লাগেছে। এই সময় ভুইবাড়িত দাওয়া (স্প্রে) না ছিটাইলে আলু পচি বরবাদ হইবে।
উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনয়নের লক্ষণপুর চড়কপাড়ার কৃষক মতিয়ার রহমান (৫৫) বলেন, চার বিঘা জমির আলু গাইরছি ব্যাহে। কিন্তু কুয়াশা হামাক ডেনডারাত (সমস্যায়) ফেলাইছে ব্যাহে। পেতেক দিন স্প্রে করিবার লাগেছে। চারদিন ধরি সূর্যের মুখও দেখা যায়নি।
কৃষকরা জানান, আলু মৌসুমে বীজআলু ১০০ টাকা কেজি হিসেবে কিনে জমিতে লাগানো হয়েছে। কুয়াশা ও শীতে এবার ঘন ঘন স্প্রে করার কারণে প্রতিকেজি আলু উৎপাদনে খরচ পড়ছে ২৫ টাকা আর বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৮/২০ টাকায়। দু-একদিনের মধ্যে কুয়াশা কেটে না গেলে আলুর ব্যাপক ক্ষতি হবে।
সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম জানান, গত কয়েকদিন ধরে সৈয়দপুরের তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। সেই সঙ্গে কুয়াশা ও ঠাণ্ডা অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলার কামারপুকুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আশা জানান, কুয়াশার কারণে আলু ও বোরো বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আলুর ক্ষতি ঠেকাতে কৃষকদের ছত্রাকনাশক ছিটানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বোরো বীজতলা পলিথিনে ঢেকে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ জানান, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে তদারকি বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, গত বছর আলুর চাহিদা বেশি ছিল। সে তুলনায় জোগান ছিল কম। তাই ভালো দাম পেয়েছে কৃষক। গতবারের দেখাদেখি এবার আবাদ বাড়িয়ে বিপদে পড়েছেন চাষিরা।
প্রধান কার্যালয়ঃ বাবর রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
কর্পোরেট অফিসঃ
চৌধুরী ভিলা, বাসস্ট্যান্ড, জলঢাকা, নীলফামারী।
ইমেইলঃ taxashim@gmail.com
চৌধুরী মিডিয়া গ্রুপ এর একটি প্রকাশনা
Copyright © 2025 AlifNews24.net. All rights reserved.