আল-ইকরাম বিপ্লব, জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার কাঁঠালী ইউনিয়নের রংয়ের বাজার বাবুপাড়া এলাকায় অনুষ্ঠিত হলো কৃষকদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন—সুপ্রীম সীডস কোম্পানি লিমিটেডের উদ্যোগে "কৃষক মাঠ দিবস"। কোম্পানির উৎপাদিত উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড ধান হীরা-৯ এর উৎপাদন ও গুণগত মান প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন স্থানীয় কৃষকরা, কোম্পানির কর্মকর্তারা এবং বীজ ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলবার বিকেলে কৃষক ধনঞ্জয় রায়ের জমিতে হীরা-৯ জাতের ধান কর্তনের মাধ্যমে দিবসটির আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। এর মাধ্যমে কৃষকেরা নিজের চোখে দেখতে পান হীরা-৯ এর ফলন কেমন, ধানটির আকৃতি, রঙ এবং স্বাস্থ্য কেমন। জমিতে ধান কাটার সেই দৃশ্য ছিল অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর এবং কৃষকদের মধ্যে ছিল ব্যাপক আগ্রহ ও উৎসাহ।

এরপর বাবুপাড়া মাঠ এলাকায় এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষক প্রতিনিধি শ্রী যোগেশ চন্দ্র রায়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রীম সীডস কোম্পানির প্রধান কার্যালয় (ঢাকা) থেকে আগত সিনিয়র ম্যানেজার কৃষিবিদ হাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন মীরগঞ্জ বাজারের মেসার্স কল্যাণ সীড স্টোরের প্রতিষ্ঠাতা বীজ ব্যবসায়ী শ্রী প্রদীপ কুমার রায়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন রংপুর রিজিওনাল ম্যানেজার এ.কে.এম. গোলাম কারিম।

আলোচনায় বক্তারা হীরা-৯ ধান সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তারা বলেন, এই জাতটি একদিকে যেমন উচ্চ ফলনশীল, অন্যদিকে তেমনই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন। এছাড়াও ধানের আকৃতি, গড় ও বাজার মূল্য সবদিক থেকেই এটি কৃষকদের জন্য লাভজনক। কৃষিবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, “আমরা হীরা-৯ এর মাধ্যমে কৃষকদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছি। এই জাতের ধান কম সময়ে ঘরে তোলা যায় এবং প্রতি একরে ফলন আসে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি।”

সভায় অংশগ্রহণকারী কৃষকরা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। কৃষক ধনঞ্জয় রায় জানান, “আমি আগে নানা ধরনের ধান করেছি, কিন্তু হীরা-৯ এর মতো ফলন আর দানার গুণগত মান অন্য জাতে পাইনি।” অন্য কৃষকরাও একই মত পোষণ করে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানের শেষপর্বে এক চমকপ্রদ আয়োজন ছিল “বিশেষ লাকি কুপন ড্র”। এতে অংশ নেয়া কৃষকদের মধ্য থেকে কয়েকজন বিজয়ী নির্ধারণ করা হয় এবং তাদের হাতে কোম্পানির পক্ষ থেকে উপহারস্বরূপ কৃষিপণ্য তুলে দেওয়া হয়।

এ ধরনের অনুষ্ঠান শুধু কৃষকদের উৎসাহিত করে না, বরং কৃষির উন্নয়ন ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে এক ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। সুপ্রীম সীডস কোম্পানির এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে জলঢাকার কৃষিক্ষেত্রে এক আশার আলো যোগ করেছে।